1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

বিদ্যুৎ ভৌমিক : সাহিত্য চেতনা


 ম্যাকডেভিড  মহাশূন্য  এবং  প্রতিটা  জন্মের  মৃত্যু  

                                বিদ্যুৎ ভৌমিক
                                        ***


ক.
এখন অদ্ভুত এক বাতাস বইছে । বাতাস নয়, অতীব পরিণতি
এই বিশ্রী সময়ে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গম হয় জীবনের
মৃত্যু বাড়ে, বেড়েই চলে সর্বনাশের মতো আয়ু
এখানে প্রভূত কষ্টে অন্ধকার গর্ভের ভেতর একাই নিঃশব্দ ;
নির্জনতা ... অথচ শরীরহীন স্বপ্নগুলো প্রতিদিনের
কানাকড়ি নিয়ে বিস্মৃতির ভেতর ডুবে গেলে বুকের ড্রয়ার
খুলে কেউ একজন দেখে নিজের কঙ্কাল  !
বেশ বিষজ্বালায় অনন্ত গভীর অতল, সে মৃত অন্তহীন অবুঝ ~
নির্বোধ, — পরের বাক্যে কবিতার কাছাকাছি চোখ ভরা বহতী
নীরবতা ; সেটাও ইচ্ছা হলে ছুঁয়ে থেমে যায় ...

খ.
নতুন স্মৃতিতে ছায়ারাও অবাক
শিকরের টানে শুরু হয়, অলীক আক্রোশ
প্রতিটা জন্মের মৃত্যু মহাকাশ থেকে ম্যাকডেভিড মহাশূন্য
ছিমছাম অথচ সতত যন্ত্রণা ভোগে  !  বেশ কিছু অভুক্ত চোখ
দিনরাত কবিতার ভেতর সময় কাটায় — এই হোলো জীবন  ;
জরায়ুর মধ্যে খোঁজে কবেকার প্রাচীন খোলোস ।
যদি মরে যাই — অথবা জ্বর, থুতু, শ্লেষ্মা, — এদেরকে ভিখারি
করে রেখে যাব ...  পথ পৃথিবীময়,
গোপনতা আরও ভেতরে অনন্ত বিস্মৃত ।

গ.
হয়তো সারারাত আত্মঘাতী স্মৃতিরা
নিজস্ব নিয়মে দিক চিহ্নহীন — ঘৃণা এবং অস্থিরতা প্রতিদিন সিঁড়ির প্রতিটা ধাপে মধ্যরাতের চাঁদ চোখ চুপ প্রণয়ে বুকের
মধ্যে রাখে হাত  !  অহর্নিশ এই দুর্দিন এই আমিত্ব ভরা নিঃশব্দ
স্বভাবতই ক্যালেন্ডারে দোল খেতে খেতে অন্ধ হয়ে গেছে ...
শেষ রাতে অভিমানের তালা খুলে যায়
ব্যক্তিগত স্বপ্ন নিয়ে শুরু হয় মনে মনে কথাকলি, এরপর কবিতা থেকে দু'চোখ তুলে নিয়ে নিজের কপালে মাখি সর্বনাশী জ্যোৎস্না — ( এটা অবশ্য সখ করে নয়, আবার সান্ত্বনা পাব বলে নয়  )
কিছু কিছু অপূর্ণতা ম্যাকডেভিড মহাশূন্য মনে হয়
সেজন্য দিক চিহ্ন মুছে অতীত স্মরণের পথে একা হেঁটে যাওয়া
পাগল বৃষ্টির দল অবুঝ শিকারী, সেখানে বিচ্ছদ জ্বালায়
নির্জন হয়ে থাকে পূর্বপরিচয় । ( নির্ঘুমের উপাখ্যান )

ঘ.
বেঁচে থাকতে তোমার অতীব কাছে চোখ ছিল সততই ঈশ্বরীও
বুকের ভেতর এক সমুদ্র ঢেউ, নতুন আকাশ থেকে তারাদের
বিজ্ঞাপন অন্তর লজ্জায় ঘুমের মতন একদলা স্বপ্ন গন্ধে
বহতাময়  ! কেমন সহজ সেই ছবি এঁকে ভাসমান সুখ দেখাতে
চেয়ে ওধদি স্মৃতির ভেতর চোখাচোখি , চোখের মধ্যে ছুটে আসা স্পষ্ট ছায়া চুম্বনে মুছে ...
তুমি এই মৃত্যুর আগেও শ্মশান যাত্রীদের নাম বাতাসে লিখেছ
সেই সারাদিনের বৃষ্টির স্পষ্ট কথাগুলোকে ইস্ত্রিকরা পোশাক
পরিয়ে কবিতা করেছি  !

ঙ.
এই একবারই বৃষ্টি এনেছি চোখে, তোমাকে দিয়েছি
অরণ্য উপহার !  এই একবারই নরকের পথ ঘুরে লক্ষ  শিরা -
উপশিরায় জন্মঋণের রহস্য খুঁজেছি,
অতলমন্ত্রে শূন্য নামে পায়ের নীচে
বৃষ্টির গোপন ধারায় এলোমেলো হয় আয়নার  তেপান্তর ...
তবুও এই একবারই শ্রাবণ এনেছি অন্তরীক্ষ ভেঙে  !
বেশ কিছু মৃত্যু আমার চেনা হয়ে গেছে ,
আমার প্রতিজন্মের মৃত্যু আক্ষরীক এবং ভালোবাসাহীন
এই জন্যেই মুছে দিতে হয় প্রতিটা মাতৃগর্ভের স্মৃতি
মনের ভেতর থেকে যাবতীয় স্তব্ধতা, —.
আদেশ দেয় তুমি পদবী ভুলে যাও  !

চ.
ফের দুঃস্বপ্ন, ফের ঘুমন্ত অস্তিত্ব শরীরময়
সমস্ত আকাঙ্খার ঘ্রাণ নিছক অবহেলায় মুছে দেয়
কত পথ, কত প্রেম, কতই যন্ত্রণার অবুঝ অস্থিরতা —
এসব আমাকে বোঝায়, — আমি প্রাণহীন জীবন নিয়ে অতৃপ্তির জ্বালায় কত ~ শত বছরের আকাশে ঘুরেছি ...
এই একা - একা পোশাকহীন পছন্দ - অপছন্দ অথবা ছদ্ম -
আদর্শ  ; আমাকে অহর্নিশ অনন্তকাল ঘোরার - ফেরায় - ভাষায় ...
কোথাও মৃত্যুর ছবি দর্পণে দেখা দিলে ফুল - চন্দনের গন্ধ
পাপমোচনে উৎসাহ পায়  !  কী এক দেবতার কাছে আমার
প্রতিটা মৃত্যু বিশ্লেষণ , অনেকটাই ভাসমান !

ছ.
এরপর যতদিন মনে পড়া পাতা খসা বিকেলে
কে আমার কথা মনে করছে  !  সেকি প্রতিটা জন্মের চেনা মুখ,
চারপাশে অসুখের ভেতর চুপচাপ হয়ে হেমন্তের চাঁদ
ঘুম কাটেনা দুঃখে - অভিমানে, স্বপ্নের পোশাক খুলে স্নান করে
অশরীর  স্মৃতি ... দিদিভাইকেউ একজন নতমুখে ঘরে বসে থাকে ,
সে কী প্রেত  ?  হতে পারে  !
এরমধ্যে মন ভেঙে গেলে সমস্ত নির্জনতা হয় খেলার সঙ্গী
কতদিন এভাবে আসি আর যাই
কতদিন রাত ডোবা ভোরে, মৃত্যুর এক ঘন্টা পরে আবার জন্মাই ; তারপর নির্নিমেষ খুঁজি ফিরি পথ,
যে পথে দিক চিহ্নহীন দূরে আমার ঈশ্বর দাঁড়িয়ে আছে   !!                                                                                                   
Joydeb Biswas

Poet Joydeb Biswas studied Bengali literature. In 2015, at the age of 22, he published 'Sahitya Chetona' magazine. Currently two editions of the magazine are published. One is the online version and the other is the printed version. He is the founder and editor of the two editions. facebook twitter youtube instagram whatsapp

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন